ঢাকাঃ দেশের জনশক্তি রফতানিতে সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রা। মালয়েশিয়াসহ অন্য দেশে বিমানের টিকিটের সিন্ডিকেট বন্ধ এবং সৌদি আরবে একক ভিসায় সত্যায়নবিহীন বহির্গমন ছাড়পত্র চালুর দাবি করা হয়। এসব দাবি মেনে নেওয়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে বায়রার নেতারা।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি)রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা) এর সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্টের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে বায়রার সাবেক সভাপতি এম এ এইচ সেলিম বলেন, ঘুষ বাণিজ্য ও স্বৈরাচারী সরকারের রাজনৈতিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থে সিন্ডিকেট করে মালয়েশিয়ান শ্রমবাজার দখল করে নেন। ফলশ্রুতিতে অভিবাসন ব্যয় পূর্বে তুলনায় কয়ে গুন বেড়ে যায়, অধিকাংশ জনশক্তি রপ্তানিকারক ব্যবসা বঞ্চিত হয়, হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়, দেশে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়, হাজার হাজার কর্মী আটকা পড়ে যায় এবং আঁতুরঘরে বাজারটি বন্ধ হয়ে যায়।
সৌদি আরবের ভোগান্তির কথা তুলে ধরে এম এ এইচ সেলিম বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মীদের বৃহত্তর শ্রমবাজার। বর্তমানে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ শ্রমিক এই দেশে কর্মরত। বিগত অনেক বছর থেকে ২৫ জনের নিচে কোনো চাহিদাপত্রের সত্যায়নের প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতিটা চাহিদাপত্র দূতাবাস থেকে সত্যায়ন করা বাধ্যতামূলক করে দেন। এতে করে কর্মী ও শত শত রপ্তানিকারক ভীষণ বেকায়দায় পড়ে যান। তাই বাজার চালু রাখার স্বার্থে আগের নিয়মে বহির্গমন ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানান তারা।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে, অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে কিন্তু মন্ত্রণালয় ও বিএমইটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্মকাণ্ডে কোনো পরিবর্তন হয়নি। বরং মনে হচ্ছে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের প্রেতাত্মা এখনো মন্ত্রণালয় ও বিএমইটির প্রতিটি টেবিলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা শুনতে পাচ্ছি ঐ চিহ্নিত চক্রটি পুনরায় সিন্ডিকেট করে মালয়েশিয়াতে জনশক্তি রফতানি করার পাঁয়তারা করছে এবং তাদেরকে নাকি আমাদের মন্ত্রণালয়ের কেউ কেউ সহযোগিতা ও করছেন।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বর্তমান অন্তবর্তী সরকার অভিবাসী কর্মীবান্ধব। বিমানবন্দরে অভিবাসী কর্মীদের জন্য ভিআইপি লাউঞ্জ খোলা, বিমানবন্দরে তাদের হয়রানি বন্ধ করা, রেমিটেন্স বিপরীতে প্রণোদনা দেওয়া, ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ দেয়া ও পেনশন স্কিম চালু করার সহ অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো কম সময়ে, কম খরচে অধিক সংখ্যায় কর্মী প্রেরণ করা এবং সাথে তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করা। খরচ এবং কল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে সকল প্রকার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সিন্ডিকেট বিলুপ্ত করতে হবে ও কম সময়ে পাঠাতে হলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা দুর করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন বায়রার সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্টের মহাসচিব মোস্তফা মাহমুদসহ বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
-B