আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে বগুড়া বিমানবন্দর 

- মনিটর রিপোর্ট  Date: 12 January, 2025
আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে বগুড়া বিমানবন্দর 

বগুড়া: প্রায় দুই দশক পর অবশেষে বগুড়ায় বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে, দীর্ঘদিন ধরে লাল ফাইলে বন্দি থাকা বিমানবন্দরটি আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে  বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা ।

এমন খবরে বগুড়া ও উত্তরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে আনন্দ-উল্লাস শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বগুড়ায় হওয়ার কারণে ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার এখানে উন্নয়নের কোন পদক্ষেপই  নেয়নি।"

জানা গেছে, বগুড়ায় বিমানবন্দর চালুর জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ রবিবার (১২ জানুয়ারি) কমিটি বগুড়া বিমানবন্দর পরিদর্শনে যাচ্ছেন। পরিদর্শন শেষে বিমানবন্দর চালুর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন তারা। 

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া রবিবার বগুড়া বিমানবন্দর পরিদর্শনে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এদিন বিমান মন্ত্রণালয়, বিমানবাহিনী প্রধান ও বেবিচক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা সরেজমিনে বগুড়া বিমানবন্দর পরিদর্শন করবেন। এটা চালু করার জন্য আরও জমি অধিগ্রহণ প্রয়োজন। শুরুতে অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চালুর কথা চিন্তা করা হচ্ছে।

বগুড়ায় বিমানবন্দর স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৯৮৭ সালে। কিন্তু নানা জটিলতায় সেই উদ্যোগে ভাটা পড়ে। এরপর ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে বিএনপি সরকারের শেষ দিকে এখানে বিমানবন্দর স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এ জন্য ২২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন পায়। ১৯৯৫ সালে সদর উপজেলার এরুলিয়া এলাকায় বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের পাশে ১১০ একর জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে প্রকল্পের আওতায় রানওয়ে, কার্যালয় ভবন ও কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ, রাস্তাঘাট নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করা হয়। প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০০০ সালে। কিন্তু ২৮ বছরেও বাণিজ্যিকভাবে উড়োজাহাজ আর ওড়েনি। 

এরপর বগুড়া বিমানবন্দর বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে বেবিচক। বগুড়া-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম বাবলুর প্রস্তাবনার আলোকে সম্ভাব্যতা যাচাইপূর্বক স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিবেদনসহ মতামত দিতে বলা হয় কমিটিকে। কমিটির সদস্যরা বিমানবন্দর এলাকা পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদনও দাখিল করেন। বগুড়ায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বাড়ি হওয়ায় সেটি আমলে নেওয়া হয়নি। 

রেজাউল করিম বাবলু বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী বরাবর লিখিত আবেদন করেন। ওই আবেদনে বলা হয়, উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার বগুড়ায় বাণিজ্যিকভাবে উড়োজাহাজ চলাচলের জন্য নব্বইয়ের দশকে বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া এলাকায় প্রায় ১১০ একর জায়গাজুড়ে বিমানবন্দরটি নির্মাণ করা হয়। আন্তর্জাতিক মানের এই বিমানবন্দর নির্মাণে খরচ হয় ২২ কোটি টাকা। কিন্তু ২৮ বছরেও বগুড়া বিমানবন্দর বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়নি। ফলে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

বগুড়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) হোসনা আফরোজা গণমাধ্যমকে জানান, রবিবার  বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া ও বিমান বাহিনী প্রধানসহ একটি টিম বগুড়ায় আসছেন। বগুড়া শিল্প, শিক্ষা, ও ব্যবসা-বাণিজ্যে অন্যান্য জেলার চাইতে অনেকখানি এগিয়ে। তাই বিমানবন্দর চালু হলে শুধু বগুড়া নয়, পুরো উত্তরাঞ্চলে উন্নয়নের পরিবর্তন ঘটবে।

-B

Share this post



Also on Bangladesh Monitor