চট্টগ্রাম : অবৈধ দখলদারদের কবলে চলে গেছে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। একটি চক্র দোকান তৈরি করে ব্যবসাকেন্দ্রে পরিণত করেছে এ সৈকত। তাদের মাধ্যমে হয়রানিসহ নানা কারণে এ সৈকত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পর্যটকরা। এখন আগের মতো পর্যটকের আনাগোনা নেই এখানে। তবে এ সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে মাদক কারবারিরা সক্রিয় থাকার অভিযোগ আছে।
পতেঙ্গা সৈকতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও বেড়িবাঁধ কাম আউটার রিংরোড নির্মাণ করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সিডিএ। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে ২ হাজার ৪২৬ কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সিডিএ। এ প্রকল্পের আওতায় পতেঙ্গায় সাগরপাড়ে ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তৈরি করা হয় পর্যটন কেন্দ্র।
অবৈধ দখল প্রসঙ্গে পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের অবৈধ দখল ও অবৈধ দোকানপাট নিয়ে আমাদেরও মাথাব্যথা আছে। এখানে কয়েকটি সিন্ডিকেট সক্রিয়। এসব দোকান উচ্ছেদের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।’
ট্যুরিস্ট পুলিশের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় দায়িত্বরত পরিদর্শক ইসরাফিল মজুমদার বলেন, ‘এ সৈকতে অবৈধভাবে ২০০টির মতো দোকান গড়ে উঠেছে। এসব দোকানের জন্য সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। যেহেতু এখানে দোকান বসে গেছে, সেহেতু দোকানগুলো উচ্ছেদ করতে ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজন। আমরা এ সৈকতের নিয়ন্ত্রক চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) লিখিতভাবে চিঠি দিয়ে উচ্ছেদ করার জন্য বলেছি। তারা যখন অভিযান পরিচালনা করবে তখন আমরা সহযোগিতা করব। তবে এখানে পর্যটক কমেছে শীতের কারণে।’
পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের দোকানপাট নিয়ে আসলে আমরা সমস্যায় আছি। ওখানে মূলত তিনটি সিন্ডিকেট আছে, যারা আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায় এবং ঝামেলা পাকাতে চায়। এটি নিয়ে আমাদেরও মাথাব্যথা আছে। এসব দোকান উচ্ছেদের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে। হয়তো শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
এ বিষয়ে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী ও আউটার রিং রোডের প্রকল্প পরিচালক কাজী হাসান বিন্ শামস্ বলেন, ‘পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে অবৈধভাবে অনেক দোকান বসেছে। শিগগিরই এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এ সৈকতকে আরও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী দুটি চক্র পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত হকার সমবায় সমিতি লি. নামে এসব অবৈধ দোকান বসিয়েছে বলে পুলিশ ও স্থানীয়দের অভিযোগ। সৈকতের এসব অবৈধ দোকান উচ্ছেদের ব্যাপারে এক সংস্থা আরেক সংস্থার ওপর দোষারোপ করেই বছরের পর বছর পার করছে। অবৈধ এসব দোকান আর উচ্ছেদ হয় না।
-B