ঢাকা-করাচী রুটে সপ্তাহে ৩দিন চলবে বিমান

-মনিটর রিপোর্ট Date: 19 November, 2025
ঢাকা-করাচী রুটে সপ্তাহে ৩দিন চলবে বিমান

ঢাকাঃ প্রায় ১৩ বছর বন্ধ থাকার পর দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক নগরী করাচির সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন করে আকাশ যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করতে যাচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার।

এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন চলতি নভেম্বরে পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন।
এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, শ্রমবাজার, যাত্রীসেবা ও কার্গো পরিবহনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।  

বেবিচকের কর্মকর্তারা জানান, রুটটি পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাত্রী চাহিদা, আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ, শ্রমবাজার সম্ভাবনা এবং পাকিস্তানের বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্যিক শহরের সঙ্গে সরাসরি কানেক্টিভিটি বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে।

করাচি একসময় বাংলাদেশের ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও শ্রমবাজারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য ছিল। তবে ২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে ঢাকা-করাচি রুটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। 

পাকিস্তান সফরে বিমান উপদেষ্টা দেশটির বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ (সিসিএ), বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনা এবং করাচির বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠনের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেবেন। 

গত ৩ সেপ্টেম্বর বেবিচক সদর দপ্তরে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকের সঙ্গে পাকিস্তান সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালক নাদির শাফি দার সাক্ষাৎ করে দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট পুনরায় চালুর বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেন। 

বিমান সূত্র জানা যায়, প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে তিন দিন ঢাকা-করাচি-ঢাকা রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যাত্রীসাড়া ও বাণিজ্যিক চাহিদা বিবেচনা করে আগামীতে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে।

বিশেষ করে করাচিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, ট্রানজিট যাত্রী ও প্রবাসীদের জন্য এই সংযোগ অত্যন্ত সহায়ক হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার বোশরা ইসলাম বলেন, আপাতত সপ্তাহে ৩টি বিমান পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ব্যাপারে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের ঐতিহাসিক, বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। করাচি রুটটি পুনরায় চালু হলে দেশের পোশাক শিল্প, ওষুধ, জাহাজ নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতের রপ্তানিতে সম্ভাবনা বাড়বে। 

ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আহমেদ মারুফ সম্প্রতি বাংলাদেশে সফররত পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তান-বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি আকাশপথে যোগাযোগ পুনরায় চালু করতে দুই দেশের সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে এবং যেকোনো সময়ই ফ্লাইট শুরু হতে পারে। ইসলামাবাদ ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে এ বিষয়ে অনুরোধ করেছে।

প্রবাসী বাংলাদেশি সংগঠনগুলোও এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। ব্যবসায়ী মহল বলছে, করাচিতে সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে আমদানি-রপ্তানি খরচ কমবে, ট্রেড মিশনের কার্যক্রম গতিশীল হবে এবং দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন মাত্রা যোগ হবে।

উল্লেখ্য, একসময় করাচি রুটটি ছিল বাংলাদেশ বিমানের অন্যতম লাভজনক গন্তব্য। করাচি, লাহোর ও ইসলামাবাদে নিয়মিত ফ্লাইট চললেও যাত্রীপ্রবাহের কারণে করাচিই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুট। 

-B

Share this post



Also on Bangladesh Monitor