সৈকতে সাদা ঝিনুকের মেলা, পর্যটকে মুখর সৈকত

-মনিটর রিপোর্ট Date: 18 September, 2025
সৈকতে সাদা ঝিনুকের মেলা, পর্যটকে মুখর সৈকত

পটুয়াখালি : দেশের অন্যতম নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত  কুয়াকাটায় ধরা পড়েছে এক অনন্য প্রাকৃতিক দৃশ্য। 

ভোরের নরম আলোয় সৈকতজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অগণিত সাদা ঝিনুক দেখে মনে হচ্ছে যেন কেউ বিশাল এক সাদা গালিচা বিছিয়ে রেখেছে সমুদ্রতটে।

এই ব্যতিক্রমী সৌন্দর্যের খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রতিদিন শত শত পর্যটক ভিড় জমাচ্ছেন কুয়াকাটায়। অনেকে এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করতে ব্যস্ত, আবার কেউ কেউ শুধুই প্রকৃতির এই অবিশ্বাস্য রূপ উপভোগে মগ্ন।

স্থানীয়রা বলেন, গত কয়েকদিন থেকে প্রতিদিন ভাটার সময় সৈকতের বালুর উপর ভেসে উঠছে নানা আকার ও রঙের ঝিনুক ও শামুক। বিশেষ করে জিরো পয়েন্ট থেকে গঙ্গামতী পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় এর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

তারা আরও বলেন, সাম্প্রতিক ভাটার সময় সমুদ্র তলদেশ থেকে এসব ঝিনুক ও শামুক ভেসে এসেছে। তবে এই বিরল দৃশ্য উপভোগ করতে হলে পর্যটকদের ঠিক ভাটার সময় উপস্থিত হতে হবে। কারণ জোয়ারের সময় পুরো সৈকত পানির নিচে চলে যায়, তখন ঝিনুক দেখা যায় না।

পর্যটকরা ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা শেয়ার করছেন, যা কুয়াকাটার পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করছে।

মানিকগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক বাবলু মিয়া বলেন, এমন সুন্দর দৃশ্য আগে কখনও দেখিনি। চারপাশে সাদা ঝিনুক দেখে মনে হচ্ছে যেন রূপকথার কোনো সমুদ্রসৈকতে এসেছি। এই সৌন্দর্য যদি স্থায়ী থাকে, তাহলে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনন্দ বহুগুণ বাড়বে।

স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবিদরা বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক বিরল উপস্থাপনা কুয়াকাটা সৈকতে এই ঝিনুকের মেলা— হয়ে উঠেছে পর্যটকদের জন্য এক অতুলনীয় আকর্ষণ।

তারা সতর্ক করে বলেছেন, এই ঝিনুক যেন কেউ সংগ্রহ বা নষ্ট না করে। এটি সামুদ্রিক পরিবেশের অংশ এবং ভবিষ্যতেও এমন সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে সকলকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুশার বলেন, এই অপরূপ দৃশ্য পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। এটি পর্যটন প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে স্থানীয়দের জন্য নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। তিনি প্রশাসনকে এ বিষয়ে নজর রাখার আহ্বান জানান, যাতে কেউ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ঝিনুক কুড়িয়ে না নেয়।

উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন (উপরা) সভাপতি কে এম বাচ্চু বলেন, এই সৌন্দর্য ধরে রাখতে প্রশাসনের উচিত সচেতনতা বৃদ্ধি ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য মো. জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, এমন অপরূপ দৃশ্য অনেক বছর ধরে দেখা যায়নি। তিনি বলেন, "এই সৌন্দর্য রক্ষায় বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিওনের পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও পর্যটন শিল্প রক্ষায় আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি। সৈকতের এই সৌন্দর্য রক্ষায়ও আমাদের পুলিশ সদস্যরা কাজ করবে।

-B

Share this post



Also on Bangladesh Monitor