ঢাকাঃ ঢাকার পাশেই টাঙ্গাইলের কারখানাগুলোতে তারের মতো সাজানো তাঁতের মধ্যে বাজছে তাঁতিদের ছন্দময় হাতের কাজের শব্দ। এখানেই তৈরি হচ্ছে রঙিন সিল্ক ও কটন সুতা থেকে বিখ্যাত টাঙ্গাইল শাড়ি, যা দেশ-বিদেশে সমানভাবে প্রশংসিত।”
এ হ্যান্ডলুম শাড়ির নাম দেওয়া হয়েছে জেলা শহরটির নামে, যেখানে শত শত তাঁতি পরিবার বসবাস করে। এ শাড়ি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক প্রতীক হিসেবে পরিচিত এবং উৎসব ও বিয়ের অনুষ্ঠানে সমগ্র ভারত উপমহাদেশেই ব্যাপকভাবে প্রদর্শিত হয়।
শতাব্দীপ্রাচীন এ ঐতিহ্যবাহী শাড়ি বুননের শিল্পকে এ বছর ইউনেসকোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
প্রতিটি শাড়ি তৈরি হয় ঐতিহ্য ও কারুশিল্পের সংমিশ্রণে। তাতে থাকে স্থানীয় সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত নান্দনিক নকশা ও জটিল ভাব বা সুর। সাধারণত পুরুষেরা সুতা রাঙান, কাপড় বুনে নকশা তৈরি করেন। নারীরা চরকিতে সুতা ঘুরিয়ে সহায়তা করেন।
টাঙ্গাইল শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক বলেন, টাঙ্গাইল শাড়ি শুধু সাংস্কৃতিক প্রতীক নয়, এটি শত শত তাঁতি পরিবারের জীবিকা নির্বাহেরও উৎস।
‘আমরা টাঙ্গাইল শাড়ির উৎপাদক। শুধু আমরা নয়, আমাদের পূর্ববর্তী কয়েক প্রজন্ম শত শত বছর ধরে এই শাড়ি উৎপাদন করে আসছে।
এই শাড়ি টাঙ্গাইলের ২০০ বছরের ঐতিহ্য ও গর্ব বলে উল্লেখ করেছেন টাঙ্গাইল শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন।
তিনি বলেন, ‘শত বছর ধরে আমাদের বাপ-দাদারা এই শাড়ির ব্যবসা করে আসছেন।
তবে কাঁচামালের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এবং সস্তা ও মেশিনে বোনা কাপড়ের কারণে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তাঁত পেশা চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ কমছে। তাঁতিরা আশা করছেন, ইউনেসকোর স্বীকৃতি ও ঐতিহ্যের মর্যাদা পেলে তাঁদের এ কারুশিল্প ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণে সহায়তা করবে।
-B