ঢাকা : টানা চার দিনের ছুটিতে দেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্রগুলো মুখর হয়ে উঠেছিলো পর্যটকে।
কক্সবাজার, কুয়াকাটা সৈকত, সিলেট ও গাজীপুরের রিসোর্টগুলোতে নেমেছিলো ভ্রমণপিপাসু মানুষের ঢল।
পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মতে, ছুটির এই চার দিনে এসব এলাকায় লেনদেন হয়েছে কয়েক শ কোটি টাকার, যা পর্যটন খাতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে বলে মনে করছেন তারা।
কক্সবাজার থেকে প্রতিনিধি জাফর আলম জানান: লাখো পর্যটকের আগমনে যেন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয় পর্যটন নগরী। গত এক সপ্তাহে প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ ভ্রমণে এসেছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই পর্যটনকেন্দ্রে। ছুটির শেষ দিনে শনিবার (৪ অক্টোবর) সৈকতের সব পয়েন্টেই ছিল পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়।
মেরিন ড্রাইভ ঘিরে হিমছড়ি ঝরনা, ইনানী, প্যাঁচার দ্বীপসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ছিল লাখো পর্যটক। লাবণী পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে সৈকতের সৌন্দর্য অবলোকনে মেতেছেন অবকাশ যাপনে আসা দূর-দূরান্তের পর্যটক।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, টানা ছুটির কারণে শহরের সব হোটেলই পূর্ণ ছিলো।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর বাড়তি উপস্থিতি ছিল।
ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে বাড়তি চাপ সামাল দিতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ‘ট্যুরিস্ট এক্সপ্রেস’ নামে একজোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করেছিলো।
কুয়াকাটা : উত্তাল সমুদ্র, ভারি বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ার মধ্যেও কুয়াকাটা সৈকতে ভিড় করে লাখো পর্যটক। গঙ্গামতী থেকে লেমপুর বন পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সৈকতজুড়ে ছিল উৎসবের আমেজ।
তিন শতাধিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টের সব কক্ষ ছিল বুকিং। অনেকে আশপাশের মহিপুর ও আলীপুরে গিয়ে থাকতে বাধ্য হয়েছে।
সিলেট : ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর, ভোলাগঞ্জ, লালাখালসহ বিভিন্ন স্পটে পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
ভোলাগঞ্জ পর্যটন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সফাত উল্লাহ জানান, সাদাপাথরকাণ্ডে পর্যটন কমে গেলেও এখন কিছুটা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সিলেটের সভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন বলেন, ‘আবহাওয়া বৈরী হলেও ব্যবসা ভালো হয়েছে।’
গাজীপুর : ঢাকার পাশেই নিরিবিলি পরিবেশ আর আধুনিক সুযোগ-সুবিধার কারণে গাজীপুরের রিসোর্টগুলো ছিল ছুটির দিনে পূর্ণ।
সারা রিসোর্ট, নক্ষত্রবাড়ি, অরণ্যবাস, রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট, ভাওয়াল রিসোর্টসহ শতাধিক রিসোর্টে রুম ছিল পূর্ণ।
সারা রিসোর্টের রিজার্ভেশন এক্সিকিউটিভ লাবিব হাসান জানান, তাঁদের কাপল রুমের ভাড়া ১৮ হাজার টাকা, যার সঙ্গে রয়েছে নানা সুবিধা।
রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্টের ম্যানেজার আহাম্মদ হোসেন বলেন, আগাম বুকিং ছাড়া কেউ রুম পাচ্ছেন না। অনেকে ফিরে গেছেন।
টানা ছুটিতে উপচে পড়া পর্যটকের ভিড় দেশের পর্যটনশিল্পের জন্য ইতিবাচক বার্তা বয়ে এনেছে। তবে যাতায়াতব্যবস্থা উন্নত করা না গেলে তা অনেকের ভ্রমণ দুর্ভোগের কারণ হয়ে উঠছে—এমন মত দিয়েছেন পর্যটক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
-B