কানাডা সহজ করেছে নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়ম

-মনিটর ডেস্ক রিপোর্ট Date: 24 November, 2025
কানাডা সহজ করেছে নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়ম

ঢাকাঃ কানাডা সরকার নাগরিকত্ব আইনের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনছে, যা বিল সি-৩ নামে পরিচিত। এটি কার্যকর হলে বিদেশে জন্ম নেওয়া হাজার হাজার কানাডীয় বংশোদ্ভূত পরিবার ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে এবং দীর্ঘদিনের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত জটিলতার সমাধান হবে।

কানাডার অভিবাসন মন্ত্রী লেনা মেটলেজ ডিয়াব বলেন, “বিল সি-৩ আমাদের নাগরিকত্ব আইনের দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলো সমাধান করবে এবং বিদেশে জন্ম নেওয়া বা দত্তক নেওয়া শিশুদের পরিবারের জন্য ন্যায্যতা আনবে। এই সংস্কার পুরোনো আইনের কারণে বাদ পড়া মানুষদের নাগরিকত্ব দেবে এবং ভবিষ্যতের জন্য সুস্পষ্ট নিয়ম তৈরি করবে।”

২০০৯ সালে চালু হওয়া ‘ফার্স্ট-জেনারেশন লিমিট’ বিধি অনুযায়ী, বিদেশে জন্ম নেওয়া বা দত্তক নেওয়া কোনো শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে কানাডার নাগরিকত্ব পেত না, যদি তার বাবা-মা কানাডার বাইরে জন্মগ্রহণ করেন বা দত্তক নেওয়া হয়ে থাকে। তবে, বাবা-মায়ের মধ্যে অন্তত একজন যদি কানাডায় জন্মগ্রহণ করতেন বা নাগরিকত্ব পেতেন, তখন ওই সন্তান নাগরিকত্ব পেত।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অন্টারিও সুপিরিয়র কোর্ট এই বিধানকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে, এবং ফেডারেল সরকার সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে কোনো আপিল না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই বিধিনিষেধের কারণে অনেক মানুষ, যারা নিজেদের কানাডিয়ান ভাবতেন, তারা নাগরিকত্ব হারিয়ে ফেলেছিলেন এবং তাদের প্রায়শই ‘হারানো কানাডিয়ান’ বলা হত।

বিল সি-৩ পরিবর্তনের মাধ্যমে ‘হারানো কানাডীয়দের’ নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে। নতুন আইন অনুসারে, ‘সাবস্ট্যানশিয়াল কানেকশন টেস্ট’ চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে বিদেশে জন্ম নেওয়া কানাডীয় বংশোদ্ভূত অভিভাবকদের সন্তানের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা হবে। শর্ত হলো, অভিভাবককে সন্তানের জন্ম বা দত্তক নেওয়ার আগে কানাডায় কমপক্ষে ১,০৯৫ দিন (৩ বছর) অবস্থান করার প্রমাণ দেখাতে হবে।

আইনটি কার্যকর করার জন্য আদালত ২০২৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বাড়িয়েছে, যাতে আইআরসিসি প্রস্তুত হতে পারে। কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন এই সংস্কারকে স্বাগত জানিয়েছে, এবং তারা আশা করছে, প্রক্রিয়া শুরু হলে নাগরিকত্বের আবেদন দ্রুত বাড়বে।

১৯৪৬ সালের নাগরিকত্ব আইনের আওতায় অনেক মানুষ নাগরিকত্ব হারিয়েছিল, এবং ২০০৯ ও ২০১৫ সালের সংশোধনীতে অনেকের নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধার করা হলেও, ২০০৯ সালের ‘ফার্স্ট-জেনারেশন লিমিট’ বিদেশে জন্ম নেওয়া বংশোদ্ভূত পিতামাতার জন্য সমস্যা সৃষ্টি করেছিল। নতুন বিল সি-৩ সেই পুরোনো জটিলতার অবসান ঘটাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

-B

Share this post



Also on Bangladesh Monitor