ঢাকাঃ সরকার দেশে ই-পাসপোর্ট প্রদান প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে।
নতুন পদ্ধতিতে পাসপোর্টের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করা হবে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)-এর বায়োমেট্রিক তথ্য। এতে পাসপোর্ট আবেদন বা নবায়নের সময় পরিচয় নিশ্চিত করতে প্রযুক্তি-নির্ভর পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে, এবং পুলিশি যাচাই কার্যত বন্ধ হওয়ায় এই ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে, আবেদনকারীর এনআইডির ছবি স্ক্রিনে দেখানোর ব্যবস্থা চালু হয়েছে, যা প্রথম স্তরের ভিজ্যুয়াল যাচাই হিসেবে কাজ করে। তবে, ছবি মিলিয়ে যাচাই শতভাগ নির্ভরযোগ্য নয়, তাই আঙুলের ছাপ ও মুখের ছবি মিলিয়ে স্বয়ংক্রিয় বায়োমেট্রিক যাচাই পদ্ধতি প্রস্তাবিত।
নতুন পদ্ধতিতে, আবেদনকারীর আঙুলের ছাপ সরাসরি এনআইডির আঙুলের ছাপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে এবং মুখাবয়ব শনাক্তকরণ প্রযুক্তিও (ফেস ভেরিফিকেশন) এনআইডির ছবির সঙ্গে মিলিয়ে কাজ করবে। যদি কোনো অমিল পাওয়া যায়, তখন তা 'রেড ফ্ল্যাগ' হিসেবে আলাদা করে ম্যানুয়াল যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হবে।
এছাড়া, নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে জাল পরিচয়ে পাসপোর্ট নেয়া রোধ হবে এবং এক ব্যক্তি একাধিক নামে পাসপোর্ট নেওয়ার সুযোগ বন্ধ হবে। এতে বাংলাদেশের পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান আরও শক্তিশালী হবে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এনআইডির বায়োমেট্রিক তথ্য সরাসরি পাসপোর্টের সঙ্গে যুক্ত হলে নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। তবে, নাগরিক অধিকারের সংগঠনগুলো বায়োমেট্রিক তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে।
এদিকে, শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্যও নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে, যেখানে শিশুদের জন্য ডিজিটাল জন্মসনদ নম্বরই প্রধান পরিচয় শনাক্তকরণ কোড হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
চলতি বছর, ১৮ ফেব্রুয়ারি সরকার পাসপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা শিথিল করেছে। এখন অনলাইনে যাচাইকৃত এনআইডি ও জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যের ভিত্তিতে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
নতুন প্রস্তাবটি কার্যকর হলে বাংলাদেশের পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা ও আন্তর্জাতিক আস্থা বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে পাসপোর্ট প্রক্রিয়া দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছ হবে, এবং দেশের সুনাম বাড়াবে।
-B