চীনের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করল ভারত

-মনিটর অনলাইন Date: 13 December, 2025
চীনের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করল ভারত

ঢাকাঃ চীনা পেশাজীবীদের জন্য ব্যবসায়িক ভিসা দ্রুত দেওয়ার লক্ষ্যে ভারত জটিল আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া কমিয়েছে বলে দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। 

এটি এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক জোরদার করার একটি বড় পদক্ষেপ, যা প্রযুক্তিবিদের ঘাটতির কারণে বিলিয়ন ডলার মূল্যের উৎপাদন ক্ষতির অবসান ঘটাতে পারে।

চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত। দেশটির দুই সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চীনা পেশাজীবীদের জন্য বিজনেস ভিসা প্রদান দ্রুততর করতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপ ঠিকঠাক কাজ করলে দুই দেশের বিলিয়ন ডলার ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

কঠোর মার্কিন শুল্কনীতি বিবেচনা করে বেইজিংয়ের সঙ্গে সতর্কভাবে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কর্মকর্তারা জানান, চীনা ভিসার জন্য দিল্লি এখন থেকে একটি যাচাই ধাপ বাদ দিয়েছে, যা ভিসা অনুমোদনের সময় এক মাসের মধ্যে নামিয়ে এনেছে।

অবশ্য, ২০২০ সালে সীমান্তে ক্ষণস্থায়ী এক সংঘাতের পর কার্যত চীনাদের জন্য ভিসা প্রদান প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল এবং পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিসা যাচাইয়ের পরিধি বৃদ্ধি করে।

এখন এসব জটিলতা পুরোপুরি সমাধান হয়েছে বলে জানান বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমরা প্রশাসনিক যাচাইয়ের স্তরটি সরিয়ে দিয়েছি এবং চার সপ্তাহের মধ্যে বিজনেস ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করছি।

ভারতের পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং শীর্ষ পর্যায়ের চিন্তক সংস্থা রয়টার্সের অনুরোধে কোনও সাড়া দেয়নি।

এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ভারত থেকে “ইতিবাচক পদক্ষেপ” লক্ষ করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে মানবিক ও পেশাগত বিনিময়ের স্বার্থে সহায়ক। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেন, ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে ও বিনিময় সহজীকরণের মাত্রা বৃদ্ধিতে ইচ্ছুক চীন।

অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের হিসাবে, কঠোর যাচাইয়ের কারণে গত চার বছরে ভারতীয় ইলেকট্রনিক্স নির্মাতাদের প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারের উৎপাদন ক্ষতি হয়েছে। মোবাইল ফোন তৈরিতে ব্যবহৃত মূল যন্ত্রপাতির বড় অংশই চীন থেকে আসে।

শাওমির মতো বড় চীনা কোম্পানিগুলো ভিসা পেতে হিমশিম খাচ্ছিল। শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এসব সীমাবদ্ধতা তাদের ভারতের সম্প্রসারণ পরিকল্পনায় বাধা দেয় এবং সোলার শিল্পেও দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি সৃষ্টি হয়।

লালফিতার দৌরাত্ম্য কমানোর সিদ্ধান্তটি মোদির চীন সফর এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর এসেছে। বৈঠক শেষে দুই দেশ ২০২০ সালের পর প্রথমবারের মতো সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালু করেছে।

ভারতের সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব রাজীব গৌবার নেতৃত্বে গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটির সুপারিশে এসব শিথিলতা আনা হয়, যা চীনের ওপর বিনিয়োগ-সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কমাতেও কাজ করছে।

ইন্ডিয়ান সেলুলার অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান পঙ্কজ মোহিন্দরু বলেন, স্থলসীমান্ত লাগোয়া দেশগুলোর দক্ষ পেশাজীবীদের ভিসা দ্রুত দেওয়ার সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। এটি সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয়।

-B

Share this post



Also on Bangladesh Monitor