ঢাকাঃ বিদেশে বাংলাদেশের পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে হলে ভিসা ও বিদেশে অবস্থানের জন্য জাল কাগজপত্র দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
সরকারি সনদসহ দলিলাদির বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে হবে। অবৈধ উপায়ে বিদেশে থেকে যাওয়া বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশে ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো সোমবার (১০ নভেম্বর)ঢাকায় এক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এ বক্তৃতার আয়োজন করে। ইতালির রাষ্ট্রদূত প্রধান বক্তা ছিলেন।
আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বলেন, প্রতি বছর হাজার হাজার বাংলাদেশি অবৈধভাবে ইতালি পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা জাল কাগজপত্র জমা দিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চান এবং শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন। তাদের বাংলাদেশে ফিরে আসতে হয়।
জাল কাগজপত্র দেওয়া ও সরকারি কাগজপত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানো বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্যও দরকার, এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, কাগজপত্রের জালিয়াতি চলতে থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভরসা পাবে না।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ইতালিতে যাওয়ার চেষ্টা করে অনেকে বিপদে পড়েন। অনেকরকম দুর্ভোগের শিকার হয়ে ‘ভুক্তভোগী’ হন। এমন দুর্ভোগের জন্য ভুক্তভোগীরা নিজেরাই দায়ী।
আন্তোনিও আলেসান্দ্রো জানান, ইতালিতে অবৈধভাবে অবস্থানরত কয়েক শত বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। অবৈধভাবে যাওয়া লোকেরা যত বেশি ফিরে আসবে, বৈধভাবে তত বেশি কর্মী নেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
এ বছর বাংলাদেশের প্রায় ১৮ হাজার নাগরিক ভূমধ্যসাগরসহ বিভিন্ন পথে ইতালি ঢুকেছেন, এ তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে দালালদের দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে তারা ইতালি গেছেন। কত লোক পথে মারা গেছেন, তার কোনো হিসাব নেই। একেকজন প্রায় ১৫ হাজার ইউরোর সমপরিমাণ টাকা দালালকে দিয়েছেন। এ টাকা বাংলাদেশেই বিনিয়োগ করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করা ও বিপদ এড়ানোর জন্য তরুণদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
বাষ্ট্রদূত বলেন, স্থানীয় নিয়মকানুন বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য সহায়ক নয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এখানে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে আসা সরকার বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত হ্ওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ভিয়েতনাম নিজের ব্যবসায়ীদের প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে উৎসাহিত করেছে। এখন তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা ও দক্ষতা বেড়েছে। এর মাধ্যমে তারা ভালো ব্যবসা করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দা রোজানা রশিদ, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন ও বিআইআইএসএস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিসসহ অন্যরা আলোচনায় অংশ নেন।
-B