ঢাকাঃ রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে ৩৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি জননিরাপত্তার স্বার্থে বিমান বাহিনীর প্রাথমিক প্রশিক্ষণ ঢাকার বাইরে পরিচালনার সুপারিশ করেছে।
প্রশিক্ষণ চলাকালে পাইলটের উড্ডয়নের ত্রুটি ও নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে বলেও জানায় তদন্ত কমিটি।
বুধবার (৫ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়। প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপ্যাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল এস এম কামরুল হাসান। সেই তদন্ত প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিটি প্রায় ১৫০ জন প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী ও বিশেষজ্ঞের সাক্ষ্য নিয়ে ১৬৮টি তথ্য উদ্ঘাটন করেছে এবং ৩৩টি সুপারিশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণ চলাকালে পাইলটের উড্ডয়নের ত্রুটি ও নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
পরে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মিলনায়তনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাইলস্টোন স্কুলের ভবন রাজউকের নীতিমালা মেনে নির্মিত হয়নি, অনুমতিও নেওয়া হয়নি।
পাইলটের নিজের ভুল বা উড্ডয়নজনিত ত্রুটির কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম আরও বলেন, তদন্তে উঠে এসেছে, স্কুল ভবনটি রাজউকের অনুমোদিত বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)-এর আওতায় নির্মিত হয়নি। ভবনে মাত্র একটি সিঁড়ি ছিল, যেখানে ন্যূনতম তিনটি সিঁড়ি থাকা উচিত ছিল। পর্যাপ্ত সিঁড়ি থাকলে হতাহতের সংখ্যা অনেক কম হতে পারতো।
তিনি আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টা বরিশাল ও বগুড়ার রানওয়ে সম্প্রসারণের প্রস্তাব এবং রাজউকের সম্প্রসারিত এলাকায়— বিশেষ করে সাভার, কাঞ্চন ও তারাবো পৌরসভায়— বিল্ডিং অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজউকের নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৬ জন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে। নিহতদের অধিকাংশই মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ৩ জন শিক্ষকও প্রাণ হারান।
-B