সুন্দরবনে পর্যটক বাড়াতে ২০ বছরের মহাপরিকল্পনা 

-মনিটর রিপোর্ট Date: 16 October, 2025
সুন্দরবনে পর্যটক বাড়াতে ২০ বছরের মহাপরিকল্পনা 

ঢাকাঃ বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা এবং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে (২০২৫-২০৪৫)২০ বছর মেয়াদী সুন্দরবন ইকোট্যুরিজম মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুত করা হয়েছে। এই পরিকল্পনায় বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখে টেকসই পর্যটন বিকাশের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ রয়েছে।

মার্কিন জনগণের অর্থায়নে ও ইউএসএআইডির কারিগরি সহযোগিতায় বন বিভাগ ও সোলিমার ইন্টারন্যাশনাল ৩ বছরব্যাপী এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. ওয়াসিউল ইসলাম ডেপুটি চিফ অব পার্টি হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি জানান, এই পরিকল্পনা সুন্দরবনের পরিবেশ ও অর্থনীতিকে মিলিয়ে স্থানীয় পর্যটন শিল্প ও অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করবে এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ভূমিকা রাখবে।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো পরিবেশ-বান্ধব পর্যটন উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা ও মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং স্থানীয় জনগণের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়ন। বিদেশি পর্যটকদের আগ্রহ বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আনা এক গুরুত্বপূর্ণ দিক। প্রকল্পে কমিউনিটি-বেজড ট্যুরিজম মডেল গ্রহণ করা হয়েছে, যেখানে স্থানীয় জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে।

মাস্টারপ্ল্যানে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে। বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প জীবিকা হিসেবে কমিউনিটি-বেজড ট্যুরিজমের মাধ্যমে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এতে বনভূমির চাপ কমে ম্যানগ্রোভ বন স্বাস্থ্যকর থাকবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। ২০০ জনের বেশি ইকো গাইড প্রশিক্ষিত করা হয়েছে এবং পর্যটন কার্যক্রম কঠোর নিয়ন্ত্রণের আওতায় থাকবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জানালেন, দাকোপ এলাকার ইকো-কটেজ কর্মচারীদের পর্যটক সেবা ও গেস্ট ম্যানেজমেন্টে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য মোংলা, মুন্সিগঞ্জ, শরণখোলা ও সুন্দরবনের প্রবেশমুখে তথ্য কেন্দ্র স্থাপনের পরামর্শ রয়েছে।

বন অধিদপ্তরের ডেপুটি চিফ কনজারভেটর মো মঈনুদ্দিন খান বলেন, সুন্দরবনে প্রতি বছর প্রায় দুই লক্ষ পর্যটক আসেন, তাই বনের ভারসাম্য রক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ। এই মাস্টারপ্ল্যান বনের ক্ষতি না করে টেকসই পর্যটন নিশ্চিত করবে, যা খুবই প্রয়োজনীয়।

স্থানীয়রা জানান, কটেজগুলোতে কিছু অনিয়ম থাকলেও সরকারিভাবে নিয়ন্ত্রণ ও মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন হলে সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষা হবে এবং স্থানীয়রা উপকৃত হবে।

এই ২০ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা সুন্দরবনকে শুধু পর্যটনকেন্দ্র নয়, বরং পরিবেশ সংরক্ষণ ও স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।

-B

Share this post



Also on Bangladesh Monitor