লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবসে - সব পথ মিলেছে ছেঁউড়িয়ায় 

-মনিটর রিপোর্ট Date: 18 October, 2025
লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবসে - সব পথ  মিলেছে ছেঁউড়িয়ায় 

কুষ্টিয়া : ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় লালন আখড়াবাড়িতে শুরু হয়েছে ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। প্রথম দিনেই ছিলো  উপচে পড়া ভিড়। একতারা, দোতারা, ঢোল ও বাঁশির সুরে মুখর ছিল পুরো এলাকা।

আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক আয়োজনে মরা কালী নদীর তীরে বসেছে ৫ দিনের গ্রামীণ মেলা, যেখানে অংশ নিয়েছেন দেশ-বিদেশের দর্শনার্থী, সাধু-গুরু ও ব্যবসায়ীরা।

এবারের অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে অংশ নেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষক ও লেখিকা প্রফেসর গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। 

তিনি বলেন, “লালন সাঁই মানুষে মানুষে রত্ন খুঁজেছেন। তাঁর ফকিরিবাদ মতবাদকে ‘বাউল’ নামে সংকুচিত করা তাঁর ভাবধারার প্রতি অবিচার।”

ধর্মীয় বিভাজনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রথমে পথ ঠিক করতে হবে—কাশি না মক্কা? দ্বিধায় থাকলে জীবনভর দিক হারাতে হবে।”

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর অনুষ্ঠান উদ্বোধন করার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। তবে ভিডিও বার্তায় দর্শনার্থীদের শুভেচ্ছা জানান। 

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার। 

লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবস

আরও বক্তব্য রাখেন কবি ফরহাদ মাজহার, প্রফেসর আ আল মামুন ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক রেজাউদ্দিন স্টালিন।

লালন একাডেমি ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ আয়োজনে চলমান এই আয়োজনটি চলবে তিন দিন।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক প্রফেসর গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক আরও বলেন, মরমি সাধক ফকির লালন সাঁইকে যুগে যুগে বাউল সম্রাট উল্লেখ করে তার মানবতার কল্যাণের ফকিরিবাদ মতামতকে ক্ষতি করে আসছে। বাউল শব্দটি কোনো অর্থ বহন করে না। বরং ফকিরদের সঙ্গে যুক্ত করে ফকিরিবাদ খাটো করেছে।

ফকির লালন সাঁই মানব সেবার ব্রত নিয়ে অসংখ্য গান লিখে গেছেন। তার এই অমর সৃষ্টি সঙ্গীতে কখনই বাউল শব্দ ছিল না। তার গান কোনো ধর্মের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না।

লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, ‘এবার বিশেষভাবে লালন তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।  লালন অনুসারিরা মনে করেন, লালনের অহিংসার বাণী বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে পারলেই কেবল সার্থক হবে সব আয়োজন।’

-B

Share this post



Also on Bangladesh Monitor